অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা। দীর্ঘকালব্যাপী দেশি-বিদেশি শাসক-শোষকদের শোষণ, জুলুম, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রতিবাদ-আন্দোলনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা ধাপে ধাপে বেগবান হয়ে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ পূর্ণ স্বাধীনতার ঘোষণা ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনার মধ্য দিয়ে পূর্ণতা লাভ করেছিল। বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে বিদ্রোহ, বিক্ষোভ, সশস্ত্র সংগ্রামের একটা ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসব বিদ্রোহের স্বরূপ ছিল বিভিন্নমূখী। আঞ্চলিকতা, ধর্মগত বিরোধ, উৎপীড়ন-নিপীড়ন, শোষণ-বঞ্চনা, স্বাধীনতা, ন্যায্য অধিকার ইত্যাদি ছিল এসব বিদ্রোহের কারণ।
বাঙালি জাতির নেতিবাচক দিকগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে হীনমন্যতা। তাই ইতিহাসে দেখা যায় কোনো হিন্দু বাঙালি অর্থ-শিক্ষা-যশ ইত্যাদি অর্জিত হলে নিজেকে বাঙালির পরিবর্তে আর্য জাতির উত্তর পুরুষ কিংবা উচ্চ বর্ণের হিন্দু সন্তান হিসাবে পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন, একই অবস্থায় মুসলমান বাঙালি হলে নিজের পূর্ব পুরুষ আরব থেকে এসেছিলেন বলে অহংকার করতেন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে উচ্চ-নিম্ন সকল হিন্দু-মুসলমান বাঙালি ইতিহাসে প্রথম বারের মত দীর্ঘদিনের হীনমন্যতা ভুলে একই পতাকা তলে দাঁড়িয়ে আওয়াজ তুলেছিলেন: ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’; ‘জেগেছে জেগেছে, বাঙালিরা জেগেছে’; ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’।
১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি তৈরি হতে যেসব ঐতিহাসিক ঘটনা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিল সেগুলোর কালানুক্রমিক তালিকা, একাত্তরের অগ্নিগর্ভা মার্চের ঘটনাসমূহ এবং ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে এখানে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো।
বিস্তারিত →