বিংশ শতাব্দীতে তালেবানদের মধ্যযুগীয় বর্বরতায় যথেষ্ট দুর্নাম হলেও আফগানিস্তানের ইতিহাস আলেকজান্ডার, সম্রাট কনিষ্ক, সুলতান মাহমুদ, মুহম্মদ ঘোরী, চেঙ্গিস খান, তৈমুর লঙ, মোঘল সম্রাট বাবর, আহমদ শাহ আবদালী এবং আরো অনেক বিখ্যাত বীর পদচারণার ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ। আফগানিস্তান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ: এক নজরে – ভূমিকা – স্বাধীনতাত্তোর আফগানিস্তান – ভূগোলিক তথ্য – জনসংখ্যা ও অধিবাসী – সরকার পদ্ধতি – অর্থনীতি – বিদ্যুৎ ও জ্বালানী – যোগাযোগ – ফটো গ্যালারী
এক নজরে :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
প্রাগৈতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক উৎস থেকে জানা গেছে হিন্দুকোশের পাদদেশে অর্থাৎ উত্তর আফগানিস্তানের কৃষিভিত্তিক সম্প্রদায় বিশ্বের প্রাচীনতমগুলোর মধ্যে একটি। আনুমানিক ২০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এশিয়ার মেসোপটেমিয়া ও অন্যান্য সভ্যতার মানুষের সড়ক যোগাযোগের ক্রসরোড ছিল আরয়ানা (প্রাচীন আফগানিস্তান)। তখন মধ্য এশিয়া থেকে আর্যরা এই এলাকায় এসে বসতি স্থাপন শুরু করে। খৃষ্টপূর্ব পাঁচ শতাব্দীর মাঝামাঝি পারস্য সম্রাট আরিয়ানা দখল করে। ৩৩০ খৃষ্টপূর্বাব্দে মহামতি আলেকজান্ডার পারস্য সম্রাটকে পরাজিত করে আরিয়ানা করায়ক্ত করে ভারতের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। আলেকজান্ডারের মৃত্যর পর ১ম খ্রিষ্টীয় শতকে রাজা কনিষ্কের অনুগত কুশানরা আরিয়ানা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। ১ম থেকে ৪র্থ শতক পর্যন্ত একানকার প্রধান ধর্ম ছিল বৌদ্ধধর্ম। এই সময়ের অনেক বৌদ্ধ মন্দিরের ধংশাবশেষ আজও আফগানিস্তানে বিদ্যমান। ৪র্থ শতকে আফগানিস্তানের বিভিন্ন উপজাতিরা সন্মিলিতভাবে বিদ্রোহ করে কুশানদের পতন ঘটায়। এই সময়কে হেফথালাইট বা হান সাম্রাজ্য বলা হয়। এরা বেশিরভাগ বৌদ্ধ মন্দির ধংস করে দেয়। ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষের দিকে আফগানিস্তানে ইসলামের প্রচার শুরু হয়। সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে এখনে প্রথম মুসলমানদের শাসন শুরু হয় এবং পরে পাক-ভারত উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত পূর্ব পারস্য এবং মধ্য এশিয়ার তুর্কী শাসকগণ আফগানিস্তান শাসন করে। জহিরুদ্দীন মুহম্মদ বাবর ১৫০৪ সালে কাবুল দখল করেন এবং পরে ভারতে গিয়ে মোগল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। বায়েজিদ রওশনের নেতৃত্বে আফগানরা পঞ্চদশ শতাব্দীতে প্রথম মোগলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। ১৭৪৭ সালে আহমদ শাহ দুররানি কান্দাহারকে রাজধানী করে রাজতন্ত্রের পত্তন করেন। তখন থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে ক্ষমতার পালাবদল হলেও আফগানিস্তানে রাজতন্ত্র ১৯৭৩ পর্যন্ত টিকে ছিল। আহমেদ শাহ দুররানিকে আধুনিক আফগানিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে গণ্য করা হয়। অষ্টাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে আফগানিস্তানের নেতৃত্ব নিয়ে বৃটেন ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বন্ধ হয়। ১৯১৯ সালে আফগানিস্তানের তৎকালীন আমীরের নেতৃত্বে আফগানদের সাথে বৃতিশ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতির পর বৃটেন ১৯১৯ সালের ১৯ আগস্ট আফগানিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। |
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
স্বাধীনতাত্তোর আফগানিস্তান :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
স্বাধীনতার পর ৬০-এর দশকে স্নায়ু যুদ্ধের সময় দেশটি সোভিয়েত ব্লকের দিকে ঝুঁকে পড়লে মার্কিন যুকতরাষ্ট্রের রোষানলে পতিত হয়। ১৯৭৩ সালে প্রধানমন্ত্রী জহির শাহ ইউরোপ ভ্রমণে গেলে আফগান কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুথ্বানের মাধ্যমে দাউদ খান ক্ষমতা দখল করে। ১৯৭৮ সালের পর সামরিক ও পাল্টা সামরিক অভ্যুথ্ব্যানে এক অস্থির পরিস্থিতে দেশটিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন হস্থক্ষেপ করে। সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা আফগান গেরিলা ফ্রন্ট “মুজাহেদিন”-কে আর্থিক ও সামরিক সাহায্যে আমেরিকা এগিয়ে আসে। শুরু হয় দীর্ঘস্থায়ী এক গৃহযুদ্ধের। এই যুদ্ধে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর ৯০-এর দশকের শুরুতে সোভিয়েত ইউনিয়ন পরাজয় স্বীকার করে আফগানিস্তান ত্যাগ করে। বিভিন্ন দল-উপদলের মধ্যে দ্বন্ধ চরমে পৌঁছলে মোজাহিনদের নেতৃত্বে আফগানিস্তানকে ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা করে রাব্বানীকে প্রেসিডেন্ট নর্বাচিত করা হয়। মোজাহিনদের একটি গ্রুপ রাব্বানী সরকারের বিরোধীতা করে সৃষ্টি হয় “তালেবান” নামে ইসলামী জঙ্গী সংঘটন। আফগানিস্তানের অস্থীল পরিস্থিতিতে ইরান ও পাকিস্তান ইন্ধন যোগাতে থাকে। অবশেষে রাব্বানী সরকারকে উৎখাত করে ১৯৯৬ সালে তালেবানরা ক্ষমতায় এসে ব্যাপক ক্ষত্যাকান্ড চালিয়ে আফগানিস্তানে ইসলামী শরীয়া আইন চালু করে মধ্যযুগীয় বর্বর কায়দায় মানুষ হত্যা শুরু করে। তালেবানরা ইসলামী সন্ত্রাসবাদী দল আল-কায়েদাকে আফগানিস্তানে আশ্রয় দেয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর আল-কায়েদা ও তালেবানকে উৎখাত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার আফগানিস্তান আক্রমণ করে। ২০০৪ সালে তালেবান উৎখাতের পর আফগানিস্তানের সংবিধান নতুন করে লেখা হয় এবং সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রপতি-ভিত্তিক গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থা চালু হয়।
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূগোলিক তথ্য :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আফগানিস্তানের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়া। উত্তরে তুর্রমেনিস্তান, চীন ও তাজিকিস্তান, পূর্ব ও দক্ষিণে পাকিস্তান এবং পশ্চিমে ইরান। আয়তন ৬৫২,২৩০ বর্গ কি.মি. (বিশ্বের ৪১তম)। বাংলাদেশ থেকে প্রায় সাড়ে চার গুণ বড়। আয়তনের এক বৃহৎদংশ পর্বতময় এলাকা। ভূ-প্রকৃতি প্রধানত পার্বত্য, সমভূমি এবং নিম্নভূমি। আফগানিস্তানের কোন নদীবন্দর বা সমুদ্রবন্দর নেই, চতুর্দিকে স্থলভূমি। নদনদী ও হ্রদের সংখ্যা কম এবং আকারেও ছোট। দেশটির মাত্র এক শতাংশ এলাকা বনাঞ্চল।
জলবায়ু প্রধানত শুষ্ক ও বৃষ্টিপাত খুবই কম। শীতকালে খুবই শীত, বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে যখন তুষারপাত হয়। গ্রীষ্মকালে খুবই গরম, বিশেষ করে মরু অঞ্চলে। শীতকালে -৯ ডিগ্রী থেকে শুরু করে গ্রীষ্মকালে ৪৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। |
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জনসংখ্যা ও অধিবাসী :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জনসংখ্যা প্রায় ৩১,৮২২,৮৪৮ (২০১৪ সালের জুলাই), বাংলাদেশের পাঁচ ভাগের এক ভাগ। জনসংখ্যার ভিত্তিতে আফগানিস্তান বিশ্বের ৪১তম দেশ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.৩ জন, গড় আয়ু ৫০ বছর। জনসংখ্যার ৭৫% গ্রামে এবং ২৫% শহরে বাস করে। আফগানিস্তানের অধিবাসীরা প্রায় ২০টি সম্প্রদায়ে বিভক্ত যার মধ্যে পাঠান এবং তাজিক সম্প্রদায় সর্ববৃহৎ। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষা রয়েছে। অধিবাসীদের ৯৯% মুসলমান (৮০% সুন্নী, ১৯% শিয়া)।
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সরকার পদ্ধতি :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ইসলামিক প্রজাতন্ত্র আফগানিস্তান। প্রতি পাঁচ বছর পরপর সরাসরি জনগণের ভোটে নিরবাচিত হন একজন রাষ্ট্রপতি ও দুইজন উপ রাষ্ট্রপতি। আফগানিস্তান প্রশাসনিকভাবে ৩৪টি ওয়েলায়েত-এ (প্রদেশ) বিভক্ত। প্রতি প্রদেশের নিজস্ব রাজধানী আছে। প্রদেশগুলি আবার জেলায় বিভক্ত। একেকটি জেলা সাধারণত একটি করে শহর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল নিয়ে গঠিত। আভ্যন্তরীন মন্ত্রী প্রতি প্রদেশে একজন করে গভর্নর নিয়োগ করেন। গভর্নর কেন্দ্রীয় সরকারে প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রদেশের পুলিশ প্রধানকেও আভ্যন্তরীণ মন্ত্রী নিয়োগ দেন।
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
অর্থনীতি :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আফগানিস্তানে জীবনের মান অনেক আগে থেকেই নিম্নমানের ছিল। সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ ও তার পরে গৃহযুদ্ধে দেশটির অর্থনীতির চূড়ান্ত বিপর্যয় ঘটে। শহরকেন্দ্রিক কিছু বাণিজ্য ও শিল্প থাকলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে কোন উন্নয়ন হয়নি। আফিমের চাষাবাদ, ড্রাগ্স ও অস্ত্রের চোরাচালান ছিল লাভজনক ব্যবসা। আফগানরা মূলত কৃষক ও পশুপালক। সাম্প্রতিক কালে খনি ও ভারী শিল্পের কিছুটা উন্নতি ঘটে, তবে স্থানীয় হস্তশিল্পের গুরুত্ব এখনো খুব বেশি। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের পেশা কৃষি ও পশুপালন এবং বাসস্থান মাটির তৈরি।
৬০-র দশকে অন্যান্য বড় দেশের সহায়তায় আফগানিস্তান রাস্তা, বাঁধ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, বিমানবন্দর, কারখানা ও সেচ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে কিছুটা হলেও সক্ষম হয়। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েতরা আসার পর পশ্চিমা বিশ্বের সাহায্য বন্ধ হয়ে যায় এবং ১৯৯১ সালে সোভিয়েত শাসনের মুক্তির পর আবার সাহায্য আসা শুরু হয়। ২০০১ সালে তালেবানদের পতনের পর আফগানিস্তানে নতুন করে আন্তর্জাতিক সাহায্য নিয়ে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধীর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তানের রপ্তানিকৃত দ্রব্যের মধ্যে শুকনা ফল ও বাদাম, হস্তনির্মিত কার্পেট, পশম, তুলা, চামড়া, ও নানা ধরনের মণিপাথর প্রধান। আফগানিস্তান বিদেশ থেকে খাদ্য, মোটর যান, পেট্রোলিয়াম, ও কাপড় আমদানি করে। |
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বিদ্যুৎ ও জ্বালানী :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পেট্রোলিয়াম, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও জলবিদ্যুৎ আফগানিস্তানের প্রধান শক্তি-উৎস। পেট্রোলিয়াম মূলত ইরান ও তুর্কমেনিস্তান থেকে আমদানি করা হয়। আফগানিস্তানের নিজস্ব সামান্য তেল সম্পদ উত্তরে আমুদরিয়ার কাছে অবস্থিত। দেশটি কয়লা ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর বেশি নির্ভরশীল। কাঠের লাকড়িও অনেক ঘরে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তবে বন উচ্ছেদের ফলে এগুলি পাওয়া এখন দুষ্কর হয়ে পড়েছে। কন্দুজ, কাবুল, আর্গান্দবাদ ও হেলমান্দ নদীর উপরের বাঁধগুলি মূলত শহরগুলিতে জলবিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এগুলি সেচের জন্য পানিও ধরে রাখে। গৃহযুদ্ধের আগে দেশটির জলবিদ্যুৎ-ক্ষমতার মাত্র ১০ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছিল। যুদ্ধের সময় টারবাইন, ফ্লাডগেট, ট্রান্সমিশন লাইন, ইত্যাদি ধ্বংস করে ফেলা হয়। ব্যক্তিগত ডিজেল-চালিত জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হত। ২০০২ সালে তালেবান পতনের পর দেশের পাওয়ার নেটওয়ার্ক আবার নতুন করে তৈরি করার পরিকল্পনা নেয়া হয়।
|
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
যোগাযোগ :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
রুক্ষ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য এবং যথাযথ পরিবহন কাঠামোর অভাবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে ভ্রমণ অত্যন্ত দুরূহ। দেশের প্রায় ২৪ শতাংশ রাস্তা কাঁচা। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন মহাসড়কটি বৃত্তাকারে প্রধান প্রধান শহরগুলিকে সংযুক্ত করেছে। কাবুল থেকে শুরু হয়ে এই মহাসড়কটি উত্তরে সালাং সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়ে গিয়ে তাশকুরঘান যায়, তারপর পশ্চিমে মাজরে শরীফ হয়ে মেইমানেহ ও হেরাতে পৌঁছে; এরপর এটি দক্ষিণ-পূর্বে মোড় নিয়ে কান্দাহার যায় ও তারপর আবার উত্তর-পূর্বে গিয়ে কাবুলে ফেরত আসে। আফগানিস্তানের সড়ক ব্যবস্থা দেশটিকে পাকিস্তানের সাথে সংযুক্ত করেছে। উত্তরে জালালাবাদ ও পাকিস্তানের পেশওয়ার শহর সংযুক্ত, অন্যদিকে দক্ষিণে কান্দাহার ও চামান শহর সংযুক্ত। আরেকটি বড় রাস্তা হেরাত থেকে ইরানে প্রবেশ করেছে। যুদ্ধের কারণে অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাবুল ও দেশের উত্তরের সাথে যোগসূত্র স্থাপনকারী সালাং সুড়ঙ্গ ১০ বছর বন্ধ থাকার পর ২০০২-এর শুরুতে আবার খুলে দেয়া হয়।
কিছু কিছু রাস্তা শীতকালে ও বসন্তকালে বরফ পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। শহরগুলিতে তিন চাকার অটোরিক্সা সাধারণ যানবাহন। অনেক জায়গায় ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করা হয়। গ্রামাঞ্চলে আফগানিরা পায়ে হেঁটে, গাধা বা ঘোড়ার কিংবা মাঝে মাঝে উটের পিঠে চড়ে ভ্রমণ করে। আফগানিস্তানের কোন সমুদ্র বন্দর নেই, তাই স্থলপথেই অন্যান্য দেশের সাথে আমদানি-রপ্তানি সম্পন্ন হয়। রেল পরিবহন নগণ্য, তাই দেশের ভেতরে মাল পরিবহন মূলত সড়কপথেই সম্পন্ন হয়। নদী পরিবহন মূলত আমু দরিয়া নদীতেই সীমাবদ্ধ। আমু দরিয়ার ওপর কেলেফ্ত, খয়রাবাদ ও শির খান নদীবন্দরগুলি অবস্থিত। কাবুল ও কান্দাহারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে। ২০০১ সালে মার্কিনী বোমা হামলায় কাবুল বিমানবন্দর ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু পুনর্নির্মাণ প্রকল্পে এটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়। বর্তমানে বহির্বিশ্বের সাথে এই বিমানবন্দরই আফগানিস্তানের যোগসূত্র। দেশের ভেতরে আরও কিছু ছোট ছোট বিমানবন্দর আছে। আরিয়ানা আফগান এয়ারলাইন্স জাতীয় বিমান সংস্থা। প্রথম বেসরকারী বিমান সংস্থা কাম এয়ার ২০০৩ সালে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল শুরু করে। |
||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ফটো গ্যালারী :: | + | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সূত্র : উকিপিডিয়া, সিআইএ, ইন্টারনেট