‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) বিল, ২০১৪’ বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পক্ষে ৩২৮ ও বিপক্ষে ০ ভোটে পাস হয়েছে। সংবিধানের বর্তমান ৯৬ অনুচ্ছেদের এই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পরিবর্তে জাতীয় সংসদের হাতে ফিরে এলো।
১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় উচ্চ আদালতের বিচারকদের পদের মেয়াদ নির্ধারণ ও তাদের সরানোর ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর পর এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে যায়। চতুর্থ সংশোধনী বাতিল হলে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকারের আমলে এক সামরিক আদেশে বিচারপতিদের অভিশংসনের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। গতকাল (17 Sep, 2014) বিলটি পাসের ফলে এখন আবার বিচারকদের সরানোর ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরলো।
বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর এবং বিভিন্ন দফায় ৩০টি সংশোধনীর প্রস্তাব করেন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য। বিলটির ওপর আনা জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব এবং বিভিন্ন দফায় আনা সংশোধনী প্রস্তাবসমূহ কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যাওয়ার পর সংসদ সদস্যরা অধিবেশন কক্ষ থেকে বের হয়ে সংসদ লবিতে গিয়ে গোপন ব্যালটে স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিলের পক্ষে ভোট দেন।
বিলে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, একজন বিচারক সাতষট্টি বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন। প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্যসংখ্যার অনূন্য দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতা দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে রাষ্ট্রপতির আদেশে কোনো বিচারককে অপসারণ করা যাবে। বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবে। এ ছাড়া কোনো বিচারক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদত্যাগ করতে পারবেন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক ও দৈনিক প্রথম আলো, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪