ক্রিকেট একটি দলভিত্তিক খেলা। প্রতি দলে ১১জন করে খেলোয়াড় নিয়ে দুই দলের মধ্যে এই খেলা হয়। ক্রিকেটের একটি ম্যাচ সর্বোচ্চ ৫দিন পর্যন্ত চলতে পারে। দেশ এবং খেলার ফর্মের (টেস্ট, ওয়ান ডে, টি২০) ওপর ভিত্তি করে ক্রিকেটের আইনকানুনে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও বেসিক আইনকানুন সব ক্ষেত্রে প্রায় একরকম। অন্যান্য অনেক জনপ্রিয় খেলার তুলনায় ক্রিকেটের আইনকানুন কিছুটা বেশি এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অনেকটা জটিল। তাছাড়া সময়ের দাবী এবং যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিয়মিত পুরানো আইনের পরিবর্তন হচ্ছে এবং নতুন আইনের সৃষ্টি হচ্ছে। যা-ই হোক, ক্রিকেটের নতুন ও পুরাতন ভক্ত এবং উৎসাহী সাধারণ পাঠকের কাছে ক্রিকেটকে সহজ ও বোধগম্য করে তোলার উদ্দেশ্যে এখানে ক্রিকেট বিষয়ক বিভিন্ন শব্দের ব্যাখ্যা এবং খেলার নিয়ম ও আইনকানুন সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
ক্রিকেট সম্পর্কে পাওয়া সবচেয়ে পুরানো তথ্য অনুসারে ১৫৯৮ সালে এই খেলাটির নাম প্রকাশিত হয়েছিল। ষোড়শ শতকের শুরুর দিকে ইংল্যন্ডে ক্রিকেট খেলার প্রচলন ছিল। তবে তখন একে “creckett” বলা হত। শুরুতে বাচ্চাদের খেলা হিসাবে প্রচলিত হলেও পরবর্তীতে এটি আরো সুসংগঠিত হয়ে প্রধান সারির ক্রীড়ায় পরিগণিত হয়। সপ্তদশ শতকে ক্রিকেট লন্ডন ও দক্ষিণ ইংল্যন্ডে একটি জনপ্রিয় ক্রীড়ায় পরিণত হয়। জুয়ারীদের আগ্রহ ও ধনীদের বিনিয়োগে তখন কাউন্টি দল, পেশাদার খেলোয়াড় এবং ক্রিকেটের বড় ক্লাবগুলোর উৎপত্তি হয়। সেইসাথে রাজপরিবারের সদস্যসহ গণ্যমান্য অনেকে ক্রিকেটের আইন-কানুন ও উন্নয়নে গুরুত্ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ঊনবিংশ শতাব্দির শুরুতে ইংরেজদের উপনিবেশিক শাসনামলে ক্রিকেট এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা এবং এমনকি উত্তর আমেরিকায়ও ছড়িয়ে পড়ে। শুরুর দিকে ক্রিকেট খেলা ছিল অনির্দিষ্টকাল ব্যাপী – অনেকটা এখনকার টেস্ট ম্যাচের মত। ইতিহাসের প্রথম আনুষ্ঠানিক টেস্ট ম্যাচটি মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১৮৭৭ সালের ১৫ই মার্চ ইংল্যান্ড ও অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই খেলায় অষ্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে জয়লাভ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বের দুই দশককে ‘ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ’ বলা হয়। কারণ তখন ইংল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়মিত টেস্ট ম্যাচ খেলত। পরবর্তীতে ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে এই খেলা ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার লাভ করে।
বৃষ্টিপাত ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ৫দিন ব্যাপী টেস্ট ম্যাচগুলো প্রায় সময় ঠিকমত শেষ করা যেত না। এতে ক্রিকেটের প্রতি দর্শকদের আগ্রহ কমতে থাকে। তাছাড়া মানুষের সামাজিক ও কর্মজীবনে ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে কয়েকশ বছর আগের মতো দিনের পর দিন মাঠে বসে খেলা দেখার সময় ও সুযোগ অনেকের হয় না। তাই ১৯৬৩ সালে ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্লাবে প্রতিযোগীতার জন্য প্রথম সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলার প্রবর্তন করে। এরপর ইংল্যান্ডের মত অন্যান্য দেশগুলোও সীমিত ওভারের ক্রিকেট শুরু করে। ১৯৭১ সালে ইংল্যান্ড ও অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা ‘আইসিসি’ ক্রিকেটর খেলুড়ে সবগুলো দেশকে নিয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ জুন ইংল্যান্ডে প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজন করে। এতে অংশগ্রহণ করে ইংল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, ভারত, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফাইনালে অষ্ট্রেলিয়াকে ১৭ রানের ব্যবধানে পরাজিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব অর্জন করে। বর্তমান যুগের গতিশীল জীবনযাত্রায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাঠে বসে খেলা দেখার মত সময় অনেক ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের হাতেও নেই। তাই সময় ও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এবং ক্রিকেটকে ফুটবলের মত গতিশীল ও জনপ্রিয় করতে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড ২০০৩ সালে সর্বপথম ২০ ওভারের Twenty20 (T20) ক্রিকেট খেলার প্রবর্তন করে। ২০ ওভারের একটি ম্যাচ শেষ হতে প্রায় তিন ঘন্টা সময় লাগে। ২০০৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে অষ্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্টিত হয়। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় ভারত পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। উল্লেখ্য, ক্রিকেটের ইতিহাস দীর্ঘ হলেও আন্তর্জাতিক মানের ম্যাচ খেলে মাত্র ৮ থেকে ১০টি দেশ। কিছু কিছু দেশ অনেকটা এগিয়ে আসলেও আন্তর্জাতিক মানের পর্যায়ে আসতে এখনো অনেক সময় বাকী।
ক্রিকেট দলভিত্তিক খেলা। প্রতি দলে ১১ জন খেলোয়াড় নিয়ে দুই দলের মধ্যে ক্রিকেট খেলা হয়। সাধারণত প্রতিটি দল ব্যাটসম্যান, বোলার, উইকেট কিপার ইত্যাদি বিভিন্ন পারফরমেন্সের খেলোয়াড়ে নিয়ে গঠিত হয়। তাছাড়া প্রতিটি দলে একজন খেলোয়াড়কে ক্যাপ্টেন (দলনেতা) হতে হয়। কোন খেলোয়াড় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে খেলতে না পারলে বদলি খেলোয়ার নেওয়া যায় তবে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে। খেলা চলাকালীন সময়ে মাঠে দুইজন আম্পায়ার থাকে। বোলিংপ্রান্তে অবস্থানরত আম্পায়ারকে বলা হয় ফিল্ড আম্পায়ার এবং বল মোকাবেলায় নিয়োজিত ব্যাটসম্যানের সমান্তরালে অবস্থানরত আম্পায়ারকে স্কয়ার লেগ আম্পায়ার। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষমতাজনিত কারণে কিংবা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত যাঁচাইকল্পে সর্বোপরি এ দু’জন আম্পায়ারকে সহযোগীতার লক্ষ্যে মাঠের বাইরে আরো একজন আম্পায়ার থাকেন। তিনি তৃতীয় আম্পায়ার বা থার্ড আম্পায়ার নামে পরিচিত। এছাড়াও, খেলায় বল সংরক্ষণ, সরবরাহ, পরিবর্তন, মাঠে দায়িত্বপালনরত আম্পায়ারদ্বয়ের জন্য কোমল পানীয়, তাঁদের ভ্রমণের বন্দোবস্তসহ আহার-ভোজনের দায়িত্বে থাকেন চতুর্থ আম্পায়ার বা ফোর্থ আম্পায়ার। খেলা সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়াদি বিশেষতঃ আম্পায়ারগণের সিদ্ধান্ত ও ভূমিকা নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন প্রণয়নের দায়িত্বে থাকেন আইসিসি কর্তৃক মনোনীত একজন ম্যাচ রেফারি। বদলী খেলোয়াড়: ফিল্ডিং দলের কোনো খেলোয়াড় খেলার মাঠে আহত হলে বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর বদলে অতিরিক্ত খেলোয়াড় খেলতে পারবে। তবে অতিরিক্ত খেলোয়াড়টি বোলিং বা উইকেট কিপারে খেলতে পারবে না, শুধু ফিল্ডিং-এ খেলতে পারবে। ব্যাটিং দলের কোনো খেলোয়াড় খেলার মাঠে আহত হলে বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর বদলে কোন অতিরিক্ত খেলোয়াড় খেলতে পারবে না। আহত ব্যাটসম্যান আপাতত: রিটায়র্ড করবে। তবে ইনিংস শেষ হওয়ার আগে যদি সুস্থ হয় তবে আবার ব্যাটিং-এ ফিরে যাবে। যদি ইনিংস শেষ হওয়ার আগে সুস্থ না হয় তবে তাঁর উইকেটটি Retired Out হিসাবে গণ্য হবে।
ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী দু’টি দলের একটি ব্যাটিং ও অপরটি ফিল্ডিং করে থাকে। প্রথমে কোন দল ব্যাট করবে বা কোন দল ফিল্ডিং করবে তা নির্ধারন হবে কয়েন টচের মাধ্যমে। কয়েন টচে যে দল জিতবে সে দলের ক্যাপ্টেনই প্রথম সিদ্ধান্ত নেবে তাঁরা ব্যাট করবে নাকি ফিল্ডিং করবে। ব্যাটিং দলের পক্ষ থেকে মাঠে থাকে দুইজন ব্যাটসম্যান, বাকীরা মাঠের বাইরে অপেক্ষা করে। পরে পালাক্রমে তাঁরাও এসে ব্যাটিং করে। ফিল্ডিং দলের এগারজন খেলোয়াড়ই মাঠে উপস্থিত থাকে যার মধ্যে এক জন উইকেটকিপার যিনি দস্তানা বা গ্লাভস হাতে স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যানের উইকেটের পিছনে অবস্থান করে। ৯ জন (ফিল্ডার) মাঠের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়ায় এবং বাকী একজন খেলোয়াড় (বোলার) স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যানের উদ্দেশ্যে বল নিক্ষেপ করে। সাধারণত নিক্ষেপকৃত বল মাটিতে একবার পড়ে লাফিয়ে সুইং করে বা সোজাভাবে ব্যাটসম্যানের কাছে যায়। ব্যাটসম্যান ব্যাট দিয়ে কৌশলে বলটিকে শট করে দূরে পাঠাবার চেষ্টা করে। মাঠের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেওয়া ফিল্ডাররা চেষ্টা করে বলটিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উইকেটে ফেরত পাঠাতে। আর ব্যাটসম্যান দু’জন বলটি ফেরত আসার আগে পরষ্পর স্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করে। একবার স্থান পরিবর্তন করতে পারলে তাদের দলের পক্ষে এক রান যোগ হবে। ব্যাটিং দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে আউট না হয়ে যত বেশী ও যত দ্রুত সম্ভব রান করা। বোলিং দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যাটিং দলের সব ব্যাটসম্যানদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আউট করে দেয়া এবং ব্যাটসম্যানরা যাতে সহজে রান তুলতে সেজন্য চেষ্টা করা। ব্যাটসম্যান বিভিন্নভাবে আউট হতে পারে। ১০ জন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলে বা সর্বোচ্চ ওভার পর্যন্ত খেলা হয়ে গেলে ব্যটিং দল ফিল্ডিং-এ যাবে এবং ফিল্ডিং দল ব্যাটিং-এ যাবে। অর্থাৎ পালাবদল হয়ে আবার খেলা হবে। তারপরে রানের তফাৎ বা উইকেট হিসাব করে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। উল্লেখ্য, ১০ জন ব্যাটসম্যান আউট হলেই অল আউট বলা হয়, কারণ অবশিষ্ট একজন ব্যাটসম্যান দিয়ে খেলা সম্ভব হয় না। ব্যাটিং করতে কমপক্ষে দুইজন ব্যাটসম্যান লাগে। মাঠ ও সরঞ্জাম: ক্রিকেট ঘাসযুক্ত মাঠে খেলা হয়। ক্রিকেট মাঠ একটি বিশাল বৃত্তাকার অথবা ডিম্বাকার ঘাসবহুল সমতল জমিনের উপর নির্মিত হয়। যদিও মাঠের আকারের বেলায় সুনির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই তবে এটির ব্যাস সাধারণত ৪৫০ ফুট (১৩৭ মি) থেকে ৫০০ ফুট (১৫০ মি) -এর মধ্যে হয়ে থাকে। অধিকাংশ মাঠেই মোটা দড়ি দিয়ে মাঠের পরিসীমা ঘেরা দেয়া থাকে যা সীমানা নামে পরিচিত। মাঠের ঠিক মাঝে ২২ গজের (১০ × ৬৬ ফুট বা ৩.০৫ × ২০.১২ মি) ঘাসবিহীন অংশ থাকে যাকে পিচ বলে। এটি বিশেষভাবে মাটিকে শক্ত করে নির্মাণ করা হয় যাতে বলের আঘাতে সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত না হয়। পিচের দুই প্রান্তে কাঠের তিনটি করে লম্বা লাঠি বা স্ট্যাম্প থাকে। তিনটি স্ট্যাম্পের উপর দুটি বেল স্ট্যাম্পগুলোকে সংযুক্ত করে। ক্রিকেটে স্ট্যাম্পে লেগে আউট হওয়ার ক্ষেত্রে যে কোনো একটি বেল ফেলা বাধ্যতামূলক। স্ট্যাম্প ও বেল সহযোগে এই কাঠের কাঠামোকে উইকেট বলে। ক্রিকেটর মূল খেলা ঘাসবিহীন চতুর্ভুজাকৃতির এই পিসেই হয়ে থাকে। এই পিসকে মাঝখানে রেখে মাঠের কেন্দ্রীয় এলাকাকে ডিম্বাকার একটি বৃত্তে চিহ্নিত করা হয়। এটির ব্যাস প্রায় ৩০ গজ। পিচের যে প্রান্তে স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যান দাঁড়ায় তাকে বলে ব্যাটিং প্রান্ত এবং অপর প্রান্তের নাম বোলিং প্রান্ত – যেখান থেকে বোলার দৌড়ে এসে বল করে। দুটি উইকেটের সংযোগকারী দীর্ঘ কাল্পনিক রেখার মাধ্যমে মাঠটি দুটি অংশে বিভক্ত হয়; তার মধ্যে যেদিকে ব্যাটসম্যান ব্যাট ধরেন সেদিকটিকে অফ সাইড এবং যে দিকে ব্যাটসম্যানের পা থাকে সেদিকটিকে বলে অন সাইড। অন্য ভাবে বলা যায় ডান-হাতি ব্যাটসম্যানের ডান দিক এবং বাম-হাতি ব্যাটসম্যানের বাম দিক হচ্ছে অফ সাইড এবং অন্যটি অন সাইড বা লেগ সাইড। পিচে যে রেখা আঁকা থাকে তাকে বলে ক্রিজ। ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন কিনা এবং বোলার বৈধ বল করেছেন কিনা যাচাইয়ের জন্য ক্রিজ ব্যবহৃত হয়। ফিল্ডিং-এর সুবিধার্থে মাঠের বিভিন্ন অংশেকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়।
ক্রিকেট খেলার আরো দু’টি গুরুত্ত্বপূর্ণ বস্তু হচ্ছে বিশেষভাবে কাঠ, প্লাষ্টিক, কাপড় ও চামড়া দিয়ে তৈরি একটি বল এবং কাঠের তৈরি ব্যাট। বল দুই রংয়ের হতে পারে: সাদা ও লাল। একদিনের খেলায় বিশেষ করে দিবা-রাত্রির খেলায় সাধারণত সাদা বল ব্যবহৃত হয়। ক্রিকেট বলের ওজন ১৫৫.৯ থেকে ১৬৩.০ গ্রাম এবং পরিধি ২১০ থেকে ২২৫ মি.মি.। বলের আকার নষ্ট হয়ে সাইজ পরিবর্তন হয়ে গেলে বল পরিবর্তন করা হয়। ব্যাটের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৩৮ ইঞ্চি (৯৬৫ মি.মি.) এবং সর্বোচ্চ ওজন ১.৪ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
আগেই বলেছি ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী দু’টি দলের একটি ব্যাটিং ও অপরটি ফিল্ডিং করে থাকে। ব্যাটসম্যান ব্যাট দিয়ে কৌশলে বলটিকে শট করে দূরে পাঠাবার চেষ্টা করে। মাঠের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেওয়া ফিল্ডাররা চেষ্টা করে বলটিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উইকেটে ফেরত পাঠাতে। আর ব্যাটসম্যান দু’জন বলটি ফেরত আসার আগে পরষ্পর স্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করে। একবার স্থান পরিবর্তন করতে পারলে তাদের দলের পক্ষে এক রান যোগ হবে। ব্যাটিং শটের পর বলটি যদি গড়িয়ে সীমানা পেরিয়ে যায় তাহলে ব্যটিং দল পাবে চার রান, আর বলটি যদি সরাসরি উপর দিয়ে গিয়ে সীমানার বাইরে চলে যায় তখন ব্যটিং দল পাবে ছয় রান। রান দু’ভাবে হিসাব হয়: ব্যাক্তিগত ও দলীয় রান। সব ব্যাটসম্যান সংগৃহীত রান ও এক্সট্রা রানের সংগ্রহের যোগফল হল দলীয় রান। প্রতিটি ব্যাটসম্যানের নিজের শট থেকে করা রানের যোগফল হল তাঁর ব্যাক্তিগত রান।
ব্যাটিং দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে যত বেশী ও যত দ্রুত পারা যায় রান করা। উভয় ব্যাটসম্যান পরষ্পর প্রান্ত পরিবর্তন ছাড়াও আরো বিভিন্নভাবে অতিরিক্ত রান পাওয়া যায়। বোলিং দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যাটিং দলের সব ব্যাটসম্যানদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আউট করে দেয়া এবং ব্যাটসম্যানরা যাতে সহজে রান তুলতে না পারে সেজন্য চেষ্টা করা। ব্যাটসম্যান বিভিন্নভাবে আউট হতে পারে।
ফিল্ডিং দলের ১১ জনের মধ্যে একজন বোলার, একজন উইকেট কিপার এবং বাকী ৯ জন ফিল্ডার। এই নয় জন ফিল্ডারের কাজ হচ্ছে মাঠের বিভিন্ন গুরুত্ত্বপূর্ণ স্থানে দাঁড়িয়ে ব্যাটসম্যানের শট করা বলটি মাটিতে পড়ার আগেই ধরে ফেলা বা কুড়িয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উইকেটে ফেরত পাঠানো। ফিল্ডারদের সাজানোর সুবিধার্থে মাঠের বিভিন্ন অংশকে বিভিন্ন নাম দিয়ে বোঝানো হয়। মাঠের এসব অংশ স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যানের কোন দিকে তা বোঝানোর জন্য leg, cover, mid-wicket, “backward”, “forward”, or “square” শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া এসব অংশ স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যান থেকে কত দূরে তা বোঝানোর জন্য silly, short, deep or long শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়। খেলার সাথে তাল মিলিয়ে ফিল্ডারদের অবস্থান বিভিন্ন রকমের হতে পারে। সাধারণত বোলার ও ক্যাপ্টেনের পরামর্শ ও নির্দেশে এবং বোলিং-এর ধরনের (attacking and defending) ওপর ভিত্তি করে ফিল্ডারগণ মাঠের বিভিন্ন অংশে অবস্থান নেন। উল্লেখ্য, মাঠের এসব অংশের নাম সরাসরি স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যানের পজিশনের সাথে সম্পর্কিত। অর্থাৎ স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যানের পজিশন পরিবর্তন হলে বা ডানহাতির পরিবর্তে বামহাতি ব্যাটসম্যান হলে মাঠের এসব অংশের নামেরও পরিবর্তন হবে। মাঠের মধ্যখানের ‘পীচ’ অংশে কোন ফিল্ডার দাঁড়াতে পারবে না। ‘field behind square leg’ অংশে উইকেট কীপার ছাড়া সর্বোচ্চ দু’জন ফিল্ডার থাকতে পারবে। তাছাড়া ‘Power play’ চলাকালীন সময়ে ফিল্ডারদের কিছু বিধি-নিষেধ মেনে পজিশন নিতে হয়।
ফিল্ডিং দলের কোন খেলোয়াড় যখন ব্যাটসম্যানের উদ্দেশ্যে বল করেন তখন তাঁকে বলা হয় বোলার। ক্রিকেটে Bowling এবং throwing-এর মধ্যে আইনগত পার্থক্য আছে। বোলিং করার সময় কিছু নিয়মকানুন মেনে করতে হয়। বোলারের বোলিং করা প্রতিটি বলকে ইংরেজিতে a ball or a delivery বলা হয়। ৬টি বলে এক সেট যাকে বলা হয় ওভার। অর্থাৎ কোন বোলার যদি বল করে তাঁকে কমপক্ষে ৬টি (এক ওভার) বল করতে হবে। ওভার শেষে ফিল্ডিং দলকে বোলার এবং বোলিং-এর দিক পরিবর্তন হয়। এসময় আম্পায়ারদ্বয় তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেন। সীমিত ওভারের খেলায় একজন বোলার সর্বোচ্চ ২০% বল করতে পারবে। অর্থাৎ ৫০ ওভারের খেলায় ১০ ওভার এবং ২০ ওভারের খেলায় ৪ ওভার।
একজন বোলারের বল করার পদ্ধতিগুলো ছবিতে ধাপে ধাপে দেখানো হল। বোলিং-এর ধরণ, কৌশল ও বলের গতির ওপর ভিত্তি করে একে প্রধানতঃ তিনভাগে ভাগ করা হয়:
Fast bowling (137–153 km/h)
Medium pace bowling (96–119 km/h)
Spin bowling (70–90 km/h)
বিভিন্ন ক্যাটাগরির বলকে গতি, দিক ও কারগরি কৌশলের ওপর ভিত্তি করে আবারো বিভিন্নভাবে ভাগ করা হয়। যেমন: Fast/Medium pace bowling : Bouncer, Inswinger, Leg cutter, Off cutter, Outswinger, Reverse swing, Slower ball, Yorker ইত্যাদি। Spin bowling : Arm ball, Doosra, Teesra, Flipper, Googly, Carrom ball, Leg spin, Off spin, Slider, Topspinner ইত্যাদি। বোলারের বলটি পিচের কোন জায়গায় প্রথম হিট করে তার ওপর ভিত্তি করে (lengths) একে কয়েকটি নামে অভিহিত করা হয়।
এছাড়া যে বল পিসে কোন বাউন্স না করে সরাসরি ব্যাটসম্যানের কাছে পৌঁছে তাকে বলা হয় Full toss।
কিভাবে একজন ব্যটসম্যান আউট হতে পারে তা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল:
বোল্ড আউট : যখন বোলারের কোন বৈধ বল সরাসরি বা ব্যাটসম্যানের ব্যাট বা শরীরে স্পর্শের পর উইকেটে আঘাত করে এবং কমপক্ষে একটি বেল মাটিতে পড়ে যায়।
টাইম আউট : একজন ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর তিন মিনিটের মধ্যে পরবর্তী ব্যাটসম্যানকে মাঠে আসতে হয়, এর থেকে দেরী হলে নতুন ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হবে।
ক্যাচ আউট : যখন বোলারের কোন বৈধ বল ব্যাটসম্যানের হিটে বা ব্যাটে লেগে শূণ্যে উঠে যায় তখন বলটি ফিল্ডিং দলের কোন খেলোয়াড় ধরে ফেললে।
হ্যান্ডেল দ্যা বল আউট : যদি কোনো ব্যাটসম্যান বোলারের ছুড়ে দেওয়া বলকে ইচ্ছাকৃতভাবে হাত দিয়ে আটকায় বা ধরে ফেলে ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হবে।
হিট দ্যা বল টোয়াইস আউট : যদি কোনো ব্যাটসম্যান বোলারের ছুড়ে দেওয়া বলকে পরপর দুইবার হিট করে তবে ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হবে।
হিট উইকেট : যদি কোনো ব্যাটসম্যান বোলারের বলটি মোকাবেলা করতে গিয়ে বা বলটি চলমান থাকা অবস্থায় নিজের ব্যাট বা শরীরের কোন অংশে বা ড্রেসের সাথে লেগে উইকেট ভেঙ্গে যায় (স্ট্যাম্পের ওপর থেকে বেল পড়ে গেলে) তবে ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হবে।
রান আউট : যখন বোলারের কোন বৈধ/অবৈধ বল ব্যাটসম্যানের হিট বা ব্যাটে লেগে বা অন্য কোনভাবে মাঠে গড়িয়ে যায় তখন উভয় ব্যাটসম্যান রান নেওয়ার জন্য স্থান পরিবর্তন করার সময় যদি কোন ব্যাটসম্যান popping crease -এর পেছনে ফিরে আসার আগেই ফিল্ডিং দলের কেউ বলটি দিয়ে উইকেটটিতে আঘাত করে কমপক্ষে একটি বেল মাটিতে ফেলে দেয়।
স্ট্যাম্প আউট : যখন কোন ব্যাটসম্যান বোলারের কোনো বলকে হিট করতে ব্যর্থ হয় এবং বলটি উইকেট কিপারের হাতে এসে পৌঁছার মুহুর্তে ব্যাটসম্যান যদি ক্রিসের বাইরে থাকে তবে ব্যাটসম্যান ক্রিসে ফিরে আসার আগেই উইকেটকিপার যদি বল দিয়ে আঘাত করে উইকেটের বেল মাটিতে ফেলে দেন।
এলবিডাব্লিউ (Leg before wicket): যদি বোলারের বলটি পিসে হিট করে সরাসরি এসে কোনো ব্যাটসম্যানের শরীরে লাগে (অর্থাৎ ব্যাটে না লেগে) এবং অ্যাম্পায়ার মনে করেন যে বলটি ব্যাটসম্যানের শরীরে না লাগলে বোল্ড হত। তবে ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হয়। তবে বলটি যদি পিসের লেগ সাইডে হিট করে তবে আউট হবে না। তাছাড়া বলটি যদি অফ স্ট্যাম্প লাইনের বাইরে হিট করে এবং ব্যাটসম্যান শট নেওয়ার চেষ্টা করে তবে আউট হবে না।
ক্রিকেটের সবচেয়ে জটিল ও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত এই এলবিডাব্লিউ। ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে, আম্পায়াররা যেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে থাকেন তার মধ্যে অন্যতম এলবিডাব্লিউ বা লেগ বিফোর ইউকেট সংক্রান্ত আউট প্রদান৷ এই আউটির ব্যাপারে আরো খুটিনাটি কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণে নিতে হয়। এলবিডাব্লিউ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখুন: LBW
অবস্ট্রাকটিং দ্যা ফিল্ড আউট : যদি কোন ব্যাটসম্যান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এবং স্বইচ্ছায় কোন ফিল্ডারকে খেলার মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হয়।
অবৈধভাবে করা বলের জন্য কিভাবে ব্যাটিংদল অতিরিক্ত রান (Extra run) পায় তা নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল। ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ছাড়া যেসব রান ব্যাটিং দলের স্কোরে যোগ হয় সেগুলোকে অতিরিক্ত রান (Extra run) বলা হয়। সাধারণত পাঁচভাবে এই রান পাওয়া যায়:
No ball – বল করার সময় বোলারের পদক্ষেপ popping crease অতিক্রম করলে অথবা বল সরাসরি ব্যাটসম্যানের মাথার ওপর দিয়ে নিক্ষেপ করলে অ্যাম্পায়ার একে নো বল ঘোষণা করেন। তখন ব্যাটিং দলের স্কোরে এক রান যোগ হয়। তাছাড়া বোলারকে এই বলটি আবার পুনরায় করতে হয়। অনেকসময় এই বলটিকে “free hit” হিসাবে দেওয়া হয়।
Wide ball – যদি বোলারের কোন বল ব্যাটসম্যানের অবস্থান থেকে এতবেশি দূর দিয়ে যায় যে এটি ব্যাটসম্যানের পক্ষে হিট করা সম্ভব নয় তখন একে ওয়াইড বল বলা হয়। তখন ব্যাটিং দলের স্কোরে এক রান যোগ হয়। তাছাড়া বোলারকে এই বলটি আবার করতে হয়।
Bye – যদি বোলারের কোন বৈধ বল ব্যাটসম্যানের ব্যাট বা শরীরের কোন অংশে স্পর্শ না হয়ে অনেকদূর গড়িয়ে যায় তখন ব্যাটসম্যানরা পরষ্পর স্থান পরিবর্তন করে যে রান নেয় তাকে বাই রান বলা হয়। বলটি যদি সীমানা স্পর্শ করে তখন চার রান গণ্য হবে।
Leg bye – যদি বোলারের কোন বল ব্যাটসম্যান হিট করার চেষ্টা করে কিন্তু বলটি ব্যাটে না লেগে ব্যাটসম্যানের শরীরের কোন অংশে লেগে গড়িয়ে যায় তখন ব্যাটসম্যানরা যে রান নেয় তাকে বলে লেগ বাই রান। (ব্যতিক্রম LBW!)
Penalty runs – মাঠে বোলার বা ফিল্ডারগণের বিভিন্ন অবৈধ কার্যকলাপের জন্য শাস্তিস্বরুপ ব্যটিং দলকে যে রান দেওয়া হয় তাকে Penalty runs বলে।
উল্লেখ্য, এক্সট্রা রান কোন ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সংগ্রহে যোগ হবে না, শুধু দলীয় সংগ্রহে যোগ হবে। তাছাড়া নো বল বা ওয়াইড বলে ব্যাটসম্যান ইচ্ছা করলে হিট করে রান নিতে পারেন, তবে তখন শুধু রান আউট হবার সম্ভাবনা থাকবে, অন্য কোন আউট (ক্যাচ, স্ট্যাম্প) গণ্য হবে না। এভাবে নেওয়া রান ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ও যোগ হবে।
খেলার নিয়ম, সময়সীমা ও সর্বোচ্চ ওভারের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট খেলা তিন ধরনের হতে পারে। সবচেয়ে পুরাতন ও সনাতন পদ্ধতির নাম হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট। একদিনের সীমিত সর্বোচ্চ ৫০ ওভারের খেলার নাম হচ্ছে ওয়ান ডে ম্যাচ। বিভিন্ন দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত আনুষ্ঠানিক ওয়ান ডে ম্যাচকে ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনাল (ODI) বলে। ওয়ান ডে ম্যাচের মিনি-সংস্করণ হচ্ছে সীমিত ২০ ওভারের খেলা Twenty20 (T20) ক্রিকেট।
টেস্ট ম্যাচ – ক্লাসিক্যাল ক্রিকেট
যতদূর জানা যায়, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অষ্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে ক্রিকেটের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এতে অষ্ট্রেলিয়া ৪৫ রানে জয়লাভ করে। সাধারণত ‘টেস্ট স্ট্যাটাস’ পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ International Cricket Council (ICC) বিভিন্ন দেশকে যোগ্যতার ভিত্তিতে ‘টেস্ট স্ট্যাটাস’ দিয়ে থাকে। সাধারণত টেস্ট ম্যাচগুলো দুই দেশের মধ্যে সিরিজ হিসাবে খেলা হয়। এটা এক থেকে সাত ম্যাচ পর্যন্ত হতে পারে। সব ম্যাচগুলো স্বাগতিক দেশের মাঠেই অনুষ্ঠিত হয়। টেস্ট খেলায় খেলোয়াড়েরা সবসময় সাদা পোশাক পরিধান করে এবং খেলায় লাল রংয়ের বল ব্যবহৃত হয়।
প্রতি দলে ১১ জন খেলোয়াড় নিয়ে ৫ দিন ব্যাপী এই ম্যাচ চলে। প্রতি দিনের খেলাকে তিন সেশনে (প্রতি সেশন = দুই ঘন্টা) ভাগ করা হয়। অর্থাৎ বিভিন্ন বিরতি বাদ দিয়ে মোট খেলার (সক্রিয়) সময় ৬ ঘন্টা। এছাড়া ৪০ মিনিট মধ্যাহ্ন ভোজ, চা-বিরতির জন্য ২০ মিনিট এবং ইনিংস পরিবর্তনে ১০ মিনিট। কোনো ধরনের বাধা-বিঘ্ন না ঘটলে প্রতিদিন ৯০ ওভার খেলা হয়। উল্লেখ্য, সেশন ও বিরতির সময় দুর্যোগ আবহাওয়া বা অন্য কোন কারণে পরিবর্তন করা যেতে পারে। টেস্ট ম্যাচ সবসময় দিনের বেলায় খেলতে হয়, যদিও বিভিন্ন কারণ ও শর্তসাপেক্ষে ইদানিং day-night-এ টেস্ট ম্যাচ খেলার আইন পাশ হয়েছে। এখানে দুই দলে প্রতিযোগীতা হয় ইনিংস ভিত্তিতে। প্রতি ইনিংসে একদল ব্যাটিং ও অন্য দল বোলিং করে। একটি টেস্ট ম্যাচে সাধারণত চার ইনিংসের খেলা হয়। অর্থাৎ প্রতিটি দল দুইবার ব্যাটিং ও দুইবার বোলিং করার সুযোগ পায়। টেস্ট ম্যাচে জয়/পরাজয় ফলাফলের জন্য ৫ দিনের মধ্যে ৪ ইনিংস খেলা সম্পন্ন করতে হয়। যদি তা না হয় দুই দলের মধ্যে রান বা উইকেটের পার্থক্য যতই হোক না কেন ফলাফল হবে “ড্র”।
আলোচনার সুবিধার্থে মনে করি ‘এ-দল’ ও ‘বি-দল’-এর মধ্যে টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে। টচে জিতে ‘এ-দল’ সিদ্ধান্ত নিল যে তাঁরা প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করবে। সুতরাং ‘বি-দল’ বোলিং করবে। এই মুহুর্তে আমরা বলতে পারি শুরুটা (১ম ইনিংস) এভাবে হলেও টেস্টের নিয়ম অনুযায়ী পালাক্রমে ২য় ইনিংসে ‘বি-দল’ ব্যাটিং করবে ও ‘এ-দল’ বোলিং করবে, ৩য় ইনিংসে ‘এ-দল’ আবার ব্যাটিং করবে ও ‘বি-দল’ আবার বোলিং করবে এবং ৪র্থ বা শেষ ইনিংসে ‘বি-দল’ ব্যাটিং করবে ও ‘এ-দল’ বোলিং করবে। উল্লেখ্য, প্রতিটি ইনিংসের সর্বোচ্চ ওভারের সংখ্যা ও সময় অনির্দিষ্ট! অর্থাৎ যখন ব্যাটিং দলের সবাই আউট হয়ে যাবে অথবা ব্যাটিং দল ঘোষণা দিয়ে ইনিংসের ইতি টানবে তখনই ইনিংস শেষ বলে পরিগণিত হবে।
প্রতিটি ইনিংসের সম্ভাব্য পরিসমাপ্তি নিম্নের যে কোন একটি হতে পারে:
ব্যাটিং দলের সবাই আউট হয়ে গেছে অর্থাৎ ১০ উইকেট পড়ে গেছে।
উইকেট হাতে থাকা অবস্থায় ব্যাটিং দলের ক্যাপ্টেনের ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা (Declares)। সাধারণত উইকেট হাতে থাকা অবস্থায় কোন দল যদি মনে করে যে তাঁদের যথেষ্ট রান সংগ্রহ হয়েছে তখন দলের ক্যাপ্টেন ইচ্ছা করলে declare দিতে পারে।
৪র্থ বা শেষ ইনিংসে জেতার জন্য যদি প্রয়োজনীয় রান হয়ে যায়।
ম্যাচের জন্য নির্ধারিত চুড়ান্ত সময় যদি শেষ হয়ে যায়।
ডিক্লারেশন: ব্যাটিং দলের ক্যাপ্টেন দলের সবাই আউট হওয়ার আগেই যদি স্বেচ্ছায় ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে তখন তাকে ক্রিকেটের ভাষায় ‘Decleration’ বলে। এটি ম্যাচের যে কোনো সময় করা যায়। সাধারণত ‘Decleration’ দেওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ম্যাচের ফলাফল ড্র-এর পরিবর্তে জয়/পরাজয়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করা – যেখানে ‘Decleration’ দেওয়া ব্যাটিং দলের জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
উদাহরণ: মনে করি টসে জিতে ‘এ-দল’ ১ম ইনিংসে ব্যাটিং করে ৪০০ রান সংগ্রহ করে অল আউট হয়েছে এবং এর জন্য সময় লেগেছে দেড় দিন। ২য় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির পর ‘বি-দল’ ব্যাটিং শুরু করে। ৩য় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই সব উইকেট হারিয়ে ‘বি-দল’-এর সংগ্রহ মাত্র ২৫০ রান। অর্থাৎ এই মুহুর্তে ‘এ-দল’ ‘বি-দল’ থেকে ১৫০ রানে এগিয়ে আছে এবং ব্যাটিং-এর মাধ্যমে ৩য় ইনিংস শুরু করেছে। ৪র্থ দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির পর দেখা গেল ‘এ-দল’-এর সংগ্রহ ৩০০ রান এবং উইকেট হারিয়েছে মাত্র চারটি। অর্থাৎ ‘এ-দল’-এর মোট সংগ্রহ (৪০০+৩০০) ৭০০ রান এবং তারা ইচ্ছা করলে ৩য় ইনিংসের খেলা আরো অনেকক্ষণ চালিয়ে যেতে পারবে। যেহেতু ছয় উইকেট অবশিষ্ট আছে।
এখন আমরা যদি ম্যাচের সার্বিক সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে ভাবি তাহলে ডিক্লারেশনের ব্যাপারটি পরিষ্কার হবে। এই মুহুর্তে ম্যাচের ৫ দিনের মধ্যে প্রায় চার দিন শেষ এবং বাকী আছে এক দিন থেকে কিছু বেশি। চলতি ৩য় ইনিংস শেষ হওয়ার পর আরো একটি ইনিংস (৪র্থ) বাকী যেটিতে ‘বি-দল’ ব্যাটিং করবে। এখন ‘এ-দল’ যদি ব্যাটিং অনবরত রেখে আজকের দিনও (৪র্থ দিন) শেষ করে দেয় তবে রানের পার্থক্য হবে (৭০০-১৫০) ৫৫০ রানেরও বেশি। ৫ম দিনে শেষ ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ‘বি-দল’ ভাববে ‘এ-দল’-কে হারাতে এক দিনের মধ্যে ৫৫০-এর ওপরে রান নেওয়া তাদের পক্ষে অসম্ভব। সুতরাং রক্ষণাত্মক ব্যাটিং করে কোনরকমে ম্যাচের শেষ সময় পর্যন্ত সব উইকেট না হারিয়ে ঠিকে থেকে ম্যাচ ড্র করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাই ‘এ-দল’-এর উচিত হবে ৪র্থ দিন যখনই রানের পার্থক্য ৫০০-এর ওপরে যাবে তখনই ‘Decleraton’ দিয়ে ৩য় ইনিংসের সমাপ্তি টানা। তাহলে ‘বি-দল’-কে ৪র্থ দিনেই শেষ ইনিংসের ব্যাটিং করতে নামতে হবে। এতে ‘এ-দল’ ‘বি-দল’-কে অল আউট করার জন্য অর্থাৎ ৪র্থ ইনিংস শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবে এবং ম্যাচে ‘এ-দল’-এর জেতার সম্ভাবণা থাকবে বেশি।
ফলো অন: প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং দল য্ত রান করেছে ২য় ইনিংসে প্রতিপক্ষ দলের (১ম ইনিংসের বোলিং দল) রানের সংখ্যা তার চেয়ে ২০০-এর অধিক কম হতে পারবে না। অন্যথায় ফলো অনে পড়বে। আমরা জানি ১ম ইনিংসে ‘এ-দল’ ব্যাটিং করেছিল। মনে করি ১ম ইনিংসে ‘এ-দল’ ৪০০ রান করেছে এবং ২য় ইনিংসে ‘বি-দল’ ব্যাটিং-এ নেমে মাত্র ১৯০ রান করে সাবই আউট হয়ে যায়। যেহেতু ‘বি-দল’-এর রান সংগ্রহ খুবই কম (২১০ রান পিছিয়ে) তাই এখন ‘এ-দল’-এর ক্যাপ্টেন যদি মনে করে জেতার জন্য তাঁদের সংগ্রহকৃত ৪০০ রান যথেষ্ট এবং ইচ্ছা করলে পালাবদলের হিসাবে নিজেরা ব্যাটিং-এর মাধ্যমে ৩য় ইনিংস শুরু না করে ‘বি-দল’কে আবারো ব্যাটিং করতে (প্রত্যক্ষ্যভাবে ব্যাটিং-এর মাধ্যমে ৪র্থ ইনিংস শুরু করার জন্য) নির্দেশ দিতে পারে। একে ক্রিকেটের ভাষায় ‘follow-on’ বলা হয়। এখন আবার ব্যাটিং-এ নেমে বি-দল’ যদি ২১০ বা তার ওপরে রান করে তবে ‘এ-দল’ আবার ব্যাটিং- যাবে। (অর্থাৎ আগে বাদে দেওয়া ৩য় ইনিংসের খেলা হবে) আর ‘বি-দল’ যদি ২১০ রান সংগ্রহ করতে না পারে তবে ‘এ-দল’ এক ইনিংস হাতে রেখে ম্যাচ জিতে যাবে এবং এটি হবে ‘বি-দল’-এর জন্য লজ্জাজনক পরাজয়।
একটি টেস্ট ম্যাচের সমাপ্তি নিম্নলিখিত যে কোন একটি হতে পারে:
চার ইনিংসের খেলায় চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং দল (‘বি-দল’) বোলিং দলের (‘এ-দল’) সর্বমোট সংগ্রহ রানের চেয়ে বেশি রান করার আগেই অল আউট হয়ে গেছে। বোলিং দল (‘এ-দল’) পার্থক্যগত রানে জিতবে। মনে করি, ৩য় ইনিংসের খেলা শেষে ‘এ-দল’-এর মোট সংগ্রহ ৬২০ রান। চতুর্থ ইনিংসের খেলা শেষে (‘বি-দল’ অল আউট) ‘বি-দল’-এর মোট সংগ্রহ ৬০০ রান। ফলাফল ‘এ-দল’ ২০ রানে জিতেছে।
চার ইনিংসের খেলায় চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং দল (‘বি-দল’) বোলিং দলের (‘এ-দল’) সর্বমোট সংগ্রহ রানের সমান রান করে অল আউট হয়ে গেছে। ফলাফল টাই। মনে করি, ৩য় ইনিংসের খেলা শেষে ‘এ-দল’-এর মোট সংগ্রহ ৬২০ রান। অল আউট হওয়ার মুহুর্তে ‘বি-দল’-এর মোট সংগ্রহ ৬২০ রান। খেলার ফলাফল টাই। টেস্ট খেলায় এ ধরনের টাই খুবই ব্যতিক্রমী ঘটনা। (ক্রিকেট খেলায় ‘ড্র’ ও ‘টাই’-এর পার্থক্য!)
চার ইনিংস খেলায় চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং দল (‘বি-দল’) অল আউট হওয়ার আগেই বোলিং দলের (‘এ-দল’) সর্বমোট সংগ্রহ রানের চেয়ে বেশি রান করেছে। ব্যাটিং দল (‘বি-দল’) অবশিষ্ট থাকা উইকেটে জিতবে। মনে করি, ৩য় ইনিংসের খেলা শেষে ‘এ-দল’-এর মোট সংগ্রহ (১ম ইনিংস + ৩য় ইনিংস) ৬২০ রান। চতুর্থ ইনিংসের খেলায় ছয় উইকেট হারিয়ে (চার উইকেট অবশিষ্ট আছে) ‘বি-দল’-এর মোট সংগ্রহ (২য় ইনিংস + ৪র্থ ইনিংস) ৬২১ রান। ফলাফল ‘বি-দল’ চার উইকেটে জিতছে।
২য় ইনিংসের ব্যাটিং দল (‘বি-দল’) ফলো অনের কারণে ৩য় ইনিংসে আবারো ব্যাটিং-এ নেমে ১ম ইনিংসে ‘এ-দল’-এর সংগ্রহ রানের চেয়ে বেশি রান করার আগেই অল আউট হয়ে গেছে। ১ম ইনিংসের ব্যাটিং দল (‘এ-দল’) এক ইনিংস + পার্থক্যগত রানে জিতেছে। মনে করি, ১ম ইনিংসে ‘এ-দল’ ৪০০ রান করেছে এবং ২য় ইনিংসে ‘বি-দল’ ব্যাটিং-এ নেমে মাত্র ১৯০ রান করে সাবই আউট হয়ে গেছে। ৩য় ইনিংসে (ফলো অনে) আবারো ব্যাটিং- নেমে ‘বি-দল’ ২০০ রানে অল আউট। দুই ইনিংসে ‘বি-দল’-এর মোট সংগ্রহ হলো ১৯০+২০০=৩৯০ রান। তাই ফলাফল ‘এ-দল’ এক ইনিংস + ১০ রানে জিতেছে।
খেলায় ফলাফল হওয়ার আগেই যদি টেস্ট খেলার মোট সময় পেরিয়ে যায় তাহলে খেলা ড্র হবে। এ অবস্থায় কোন দলের রান বেশি বা কোন দলের উইকেট বেশি ইত্যাদি গণ্য হবে না। এটি সাধারণত টেস্ট ম্যাচের শেষের দিন ঘটে থাকে। মনে করি, ৩য় ইনিংসের খেলা শেষে ‘এ-দল’-এর মোট সংগ্রহ (১ম ইনিংস + ৩য় ইনিংস) ৬২০ রান। ৫ম দিনে চতুর্থ ইনিংসের খেলায় বেলাশেষে ‘বি-দল’-এর মোট সংগ্রহ (২য় ইনিংস + ৪র্থ ইনিংস) ৬০০ রান এবং তখনো তাদের চার উইকেট অবশিষ্ট আছে। অর্থাৎ ‘বি-দল’-এর চেয়ে ‘এ-দল’-এর ২০ রান বেশি। কিন্তু ম্যাচের চুড়ান্ত ফলাফল ড্র। কারণ ম্যাচের সময় শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু ইনিংস তো শেষ হয়নি! তাই টেস্ট ম্যাচে অনেক সময় দেখা যায় শেষ ইনিংসে বিশেষ করে শেষের দিন ব্যাটিং দল পরাজয় এড়ানোর জন্য রান বাড়ানোর ঝুঁকি না নিয়ে কোন রকমে ম্যাচের শেষ সময় পর্যন্ত ঠিকে থাকার চেষ্টা করে।
বিশেষ করে বৃষ্টি বা অন্য কোন কারণে বেশিরভাগ সময় খেলা বন্ধ থাকলে সাধারণত ম্যাচ বাতিল ঘোষণা করা হয়। তবে অনেক সময় ম্যাচ বাতিল না করে ড্র ঘোষণা করতে পারে। যদিও এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল।
প্রতি দলে ১১জন খেলোয়াড় নিয়ে দুই দলের মধ্যে খেলা হয়।
একজন বোলার সর্বোচ্চ ১০ ওভার (20% of 50 overs) বল করতে পারবে।
যে দলের ক্যাপ্টেন টচে জিতবে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁদের দল আগে ব্যাটিং করবে নাকি বোলিং করবে।
ব্যাটিং দল অল আউট (১০ উইকেট হারানো) না হওয়া পর্যন্ত বা ৫০ ওভারের ইনিংস খেলে যত রান তুলবে সেটি ২য় দলের (বোলিং দল) জন্য টার্গেট হবে।
বিরতির পর ৫০ ওভারের ২য় ইনিংস শুরু হবে যেখানে আগের বোলিং দল ব্যাটিং করবে এবং আগের ব্যাটিং দল বোলিং করবে। এখানে ব্যাটিং দলের (২য় দল) টার্গেট থাকবে আগের ইনিংসে ব্যাটিং করা দল (১ম দল) থেকে বেশি রান করার এবং বোলিং দলের (১ম দল) চেষ্টা থাকবে ব্যাটিং দলের (২য় দল) সবাইকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আউট করা ও ৫০ ওভারের মধ্যে যাতে তাদের নিজেদের সমান বা বেশি রান তুলতে না পারে সেভাবে বোলিং করা।
২য় ইনিংসের খেলা শেষ হওয়ার পর যদি দেখা যায় যে ১ম দলের রান বেশি তাহলে ১ম দল যত রান বেশি তত রানে জিতেছে। যদি ২য় দল উইকেট অবশিষ্ট থাকা অবস্থায় ১ম দলের দেওয়া রানের টার্গেট অতিক্রম করে তখন ২য় দলের হাতে যে কয়টি উইকেট অবশিষ্ট থাকে তত উইকেটে জিতবে। আর যদি ম্যাচ শেষ হওয়ার পর উভয় দলের রানের সংখ্যা সমান থাকে খেলা ‘টাই’।
খেলোয়াড়েরা সাধারণত রঙিন পোশাক পরিধান করে এবং খেলায় সাদা রংয়ের বল ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া ফিল্ডিং-এর ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত নিয়মগুলো মানা হয়:
ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে (Mandatory Powerplay) বোলিং দল ৩০ গজ বৃত্তের বাহিরে দু’জনের বেশি খেলোয়াড় রাখতে পারবে না এবং এই দু’জন ফিল্ডার স্ট্রাইকার ব্যাডসম্যানের পজিশন থেকে ১৫ গজের মধ্যে (slip, leg slip or gully positions) থাকতে হবে।
এর পরে পাঁচ ওভার করে দু’টি পাওয়ারপ্লে রয়েছে। এগুলোর একটিকে fielding powerplay এবং অন্যটিকে batting powerplay বলে। এ দু’টি পাওয়ারপ্লে ১৫তম ওভারের পরে এবং ৪০তম ওভারের আগে শেষ করতে হবে। এগুলেতে বোলিং দল ৩০ গজ বৃত্তের বাহিরে তিন জনের বেশি খেলোয়াড় রাখতে পারবে না।
Powerplay ছাড়া বাকী ওভারগুলোতে বোলিং দল ৩০ গজ বৃত্তের বাহিরে চার জনের বেশি খেলোয়াড় রাখতে পারবে না।
ইনিংসে কোন কারণে সর্বোচ্চ ওভারের সংখ্যা কমলে সে অনুপাতে পাওয়ারপ্লের ওভারের সংখ্যাও কমবে। পাওয়ারপ্লে ছাড়া বাকী সাধারণ ওভারগুলোতে ৩০ গজ ইনার-ফিল্ডের বাহিরে ৫ জন ফিল্ডার থাকবে। সেই সাথে এটাও মানতে হবে যে লেগ সাইডে ইনার এবং আউটার ফিল্ডে মিলে সর্বোচ্চ চার জন ফিল্ডার থাকতে পারবে।
বৃষ্টি বা দুর্যোগ আবহাওয়ার জন্য খেলা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকলে খেলা ৫০ ওভার থেকে কমিয়ে আনা হয় বা অনেক সময় পরের দিন অনুষ্টিত হয়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত সিদ্ধান্তের জন্য Duckworth-Lewis method নামে একটি বিশেষ নীতিমালা অনুসরণ করা হয়।
টিটোয়েন্টি – বিনোদন ক্রিকেট
টিটোয়েন্টি ক্রিকেটের নিয়মকানুন নিম্নলিখিত কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া ওয়ান ডে ম্যাচের মতোই। আসলে টিটোয়েন্টি হচ্ছে ক্রিকেটের বিনোদন সংস্করণ! এখানে খেলার মাধ্যমে দলীয় পারফরম্যান্স যাচাই করার সুযোগ কম।
এখানে ইনিংসে সর্বোচ্চ ওভার ২০।
যদি কোন বোলার বল করার সময় পপিং ক্রিস অতিক্রম করে নো রান হিসাবে ব্যাটিং দল ১ রান পাবে এবং বোলার বলটি পুনরায় ‘ফ্রি হিট’ বল হিসাবে বলিং করবে।
একজন বোলার সর্বোচ্চ ৪ ওভার (20% of 20 overs) বল করতে পারবে।
বোলিং দল লেগ সাইডে কখনো পাঁচ জনের বেশি ফিল্ডার রাখতে পারবে না।
ইনিংসের প্রথম ৬ ওভারে বোলিং দল ৩০ গজ বৃত্তের বাহিরে দু’জনের বেশি খেলোয়াড় রাখতে পারবে না।
প্রথম ৬ ওভারের পর বাকী ওভারগুলোতে বোলিং দল ৩০ গজ বৃত্তের বাহিরে পাঁচ জনের বেশি ফিল্ডার রাখতে পারবে না।
উভয়দলের সমান রান হওয়ার কারণে যদি ফলাফল টাই হয় তবে ‘সুপার ওভার’-এর মাধ্যমে জয়-পরাজয় মিমাংসীত হবে। অর্থাৎ এক ওভারের মিনি ইনিংস! প্রথমে একদল এক ওভারে ব্যাটিং করবে ও অন্যদল বোলিং করবে। তারপর আরেক ওভারে দল বদল হয়ে আগের ব্যটিং দল বোলিং করবে এবং আগের বোলিং দল ব্যাটিং করবে। এই দুই ওভারে রান/উইকেট হিসাব করে জয়-পরাজয় মিমাংসীত হবে।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন নিয়ম
এ বছর (২০১৫) জুন মাসে বারবাডোজে আইসিসির সভায় বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশ কিছু নিয়মের পরিবর্তন করা হয়। ৫ জুলাই থেকে সেগুলো কার্যকরও হয়েছে।
আগে প্রথম ১০ ওভারে পাওয়ার প্লের সময় ১৫ গজ বৃত্তের মধ্যে বাধ্যতামূলক দুজন ফিল্ডার রাখার নিয়ম ছিল। এখন থেকে সেটি আর থাকছে না।
থাকছে না ব্যাটিং পাওয়ার প্লে। আগের নিয়মে ১৫ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে ৫ ওভার ব্যাটিং পাওয়ার প্লে নিতে হতো। এই সময়ে ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকত মাত্র তিনজন ফিল্ডার। বাকি সময়ে চারজন। নতুন নিয়মে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে বাদ। কাজেই ফিল্ডিং দল এ সময়ে ৩০ গজের বাইরে অনায়াসে রাখতে পারবে সর্বোচ্চ চারজন ফিল্ডার।
শেষ ১০ ওভারে ৩০ গজের বাইরে আগে সর্বোচ্চ চারজন ফিল্ডার রাখা যেত, এখন রাখা যাবে সর্বোচ্চ পাঁচজন। সব মিলিয়ে এখন থেকে প্রথম ১০ ওভারে সর্বোচ্চ দুজন খেলোয়াড় ৩০ গজের বাইরে থাকতে পারবেন। পরের ৩০ ওভারে সর্বোচ্চ চারজন এবং শেষ ১০ ওভারে সর্বোচ্চ পাঁচজন ৩০ গজের বাইরে থাকতে পারবেন।
আগে শুধু ওভার স্টেপিংয়ের কারণে নো বল হলে ব্যাটসম্যানরা পেতেন ফ্রি-হিটের সুবিধা। এখন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুই সংস্করণেই সব ধরনের নো বলের জন্য চালু করা হয়েছে ফ্রি-হিটের নিয়ম।
পাকিস্তান যখন টেস্ট ক্রিকেটের স্ট্যাটাস পায় বাংলাদেশ তখন পাকিস্তানের অন্তর্গত পূর্ব পাকিস্তান। তখন জাতীয় ক্রিকেটের প্রায় সব খেলোয়াড় ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ মাঝে-মধ্যে শুধু ক্রিকেটের দর্শক হওয়া ছাড়া খেলার তেমন একটা সুযোগ পেত না। শুধু অর্থনৈতিকভাবে নয় এমনকি খেলাধূলোয়ও তখন পূর্ব পাকিস্তান ছিল অবহেলিত। তাই যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশকে শূন্য থেকেই শুরু করতে হয়েছিল ক্রিকেটের যাত্রা।
অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বপ্রথম আত্মপ্রকাশ করে ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফিতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে। সেবারের টুর্ণামেন্টে চার ম্যাচের দু’টিতে তারা হেরে যায় এবং দু’টিতে জয়লাভ করে। এর সাত বছর পর ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ এশিয়া কাপে ক্রিকেটে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচটি খেলে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জেতে এবং এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। বাংলাদেশ এই বিশ্বকাপে পাকিস্তান এবং স্কটল্যান্ডকে পরাজিত করে। ১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আইসিসি ওয়ানডে খেলুড়ে দেশ হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেট ম্যাচ খেলে আসছিল। অবশেষে ২০০০ সালের ২৬ জুন বাংলাদেশ দশম টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে আইসিসি’র সদস্যপদ লাভ করে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসি (International Cricket Council) ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সর্বোচ্চ ক্রিকেট পরিচালনা কর্তৃপক্ষ। ১৫ জুন, ১৯০৯ সালে ইংল্যান্ডের লর্ডসে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬৫ সালে সংস্থার নাম পরিবর্তিত হয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কনফারেন্স নামকরণ করা হয়। পূর্বে কেবলমাত্র টেস্টখেলুড়ে দেশগুলোই এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৮৯ সালে আবারো এর নাম পরিবর্তন করা হয়। এবার নামকরণ করা হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল’ যা অদ্যাবধি প্রচলিত। আইসিসি’র বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১০৫টি দেশ, যার মধ্যে ১০টি পূর্ণসদস্য রয়েছে যারা টেস্টখেলুড়ে, ৩৮টি সহযোগী সদস্য, ৫৭টি স্বীকৃত সদস্য। আইসিসি ক্রিকেটের প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করে, যার মধ্যে ক্রিকেট বিশ্বকাপ অন্যতম। আইসিসি একই সাথে বিভিন্ন টেস্ট ম্যাচ, একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ, আন্তর্জাতিক টি-টুয়েন্টি ম্যাচের জন্য আম্পায়র ও ম্যাচ রেফারী নিয়োগ দেয়। আইসিসি, সংস্থার কোড অব কন্ডাক্ট মেনে চলে, যা আন্তর্জাতিক ম্যাচের পেশাদারী মান বজায় রাখে। এছাড়া সংস্থার দুর্নীতি-দমন ইউনিট (আকসু) এর মাধ্যমে দুর্নীতি ও ম্যাচ-গড়াপেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আইসিসি সদস্য দেশের মাঝে অনুষ্ঠেয় দ্বিপাক্ষিক সিরিজের (সকল টেস্ট ম্যাচ) সূচি নির্ধারণ করে না। সংস্থাটি সদস্য দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ করে না এবং খেলাটির আইন প্রণয়ন করে না। মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব খেলাটির আইন প্রণয়নকারী সংস্থা। আইসিসি’র সদর দপ্তর বর্তমানে দুবাই শহরে অবস্থিত। আইসিসি তিন স্তরবিশিষ্ট সদস্যের ব্যবস্থা রেখেছে। পূর্ণাঙ্গ সদস্যভূক্ত দশটি ক্রিকেট পরিচালনা বোর্ডের দলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের অধিকারী। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া দেশগুলোর তালিকা:
অষ্ট্রেলিয়া (১৯০৯)
ইংল্যান্ড (১৯০৯)
দক্ষিণ আফ্রিকা (১৯০৯)
ভারত (১৯২৬)
নিউজিল্যানড (১৯২৬)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১৯২৬)
পাকিস্তান (১৯৫৩)
শ্রীলংকা (১৯৮১)
জিম্বাবুই (১৯৯২)
বাংলাদেশ (২০০০)
আফগানিস্তান (২০১৭)
আয়ারল্যান্ড (২০১৭)
এছাড়াও সহযোগী সদস্যভূক্ত ৩৮টি ক্রিকেট পরিচালনা বোর্ডের স্থায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ও ক্রিকেট খেলা আয়োজন করে থাকে; কিন্তু তারা পূর্ণ সদস্যের পর্যায়ে পড়ে না। সহযোগী সদস্যভূক্ত ৩৮টি দেশের মধ্যে T20 স্ট্যাটাস আছে মাত্র ৮টি দেশের যার মধ্যে ৬টি দেশের ( আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং এবং পাপুয়া নিউগিনি) ওয়ান ডে স্ট্যাটাসও রয়েছে। এই ছয়টি দেশ থেকে চারটি দেশকে বাছাই করে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া দেশগুলোর সাথে বিশ্ব কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া ৩য় স্তরের ৫৭টি দেশ হচ্ছে আইসিসি-র স্বীকৃত সদস্য (Affiliate Members)।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালের মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা কমনওয়েলথ ত্যাগ করলে, তারা আইসিসির সদস্যপদও হারায়। বর্ণবৈষম্য অধ্যায় শেষ হওয়ার পর ১৯৯১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা পুণরায় পূর্ণ সদস্যরূপে হিসেবে ফিরে আসে। কয়েকটি টেস্ট সিরিজে বেশ দূর্বল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ২০০৫ সালের শেষ দিকে জিম্বাবুয়ে আইসিসি’র অনুরোধে বা স্বেচ্ছায় টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় এবং আগস্ট, ২০১১ সালে প্রায় ছয় বছর স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে আবার ফিরে আসে।
ক্রিকেটের ফলাফলকে বিস্তারিতভাবে প্রকাশের জন্য স্কোরবোর্ড ব্যবহার করা হয়। এখানে সংক্ষেপে ব্যাটিং ও বোলিং দলের দলীয় স্কোর এবং সেইসাথে প্রতিটি খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত স্কোর দেওয়া থাকে। স্কোরকার্ড বোঝার আগে ক্রিকেটের কিছু শব্দসংক্ষেপ জানা জরুরি।
Abbr.
Name
Abbr.
Name
n.o.
Not Out
c.
Caught
*
Not Out
b.
Bowled OR bye
SR
Strike Rate
st.
Stumped
D/L
Duckworth Lewis
ht wk
Hit Wicket
NRR
Net Run Rate
wk
Wicket Keeper
LHB
Left Handed batsman
R/R
Run Rate
RHB
Right Handed Batsman
nb.
No Ball
DNB
Did not bat/bowl
w
Wide
FoW
Fall of Wicket
lb
Leg Bye
N/R
No Result
†
Wicket Keeper
নিচের স্কোরবোর্ডটি উদাহরণ হিসাবে দেখানো হল: 1. দুই নম্বর ব্যাটসম্যান টেন্ডুলকার ‘c Shahid Afridi b saeed Azmal’-এর অর্থ হচ্ছে সাঈদ আজমলের বলে টেন্ডুলকার শট করার পর শহীদ আফ্রিদি বলটি ধরে ফেলেছেন। অর্থাৎ টেন্ডুলকার ‘catch out’ হয়েছেন। ডান পাশের 85, 160, 115, 11, 0, 73.91 সংখ্যাগুলোর অর্থ হচ্ছে যথাক্রমে টেন্ডুলকারের ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৮৫ রান, ক্রিসে ছিলেন ১৬০ মিনিট, বল মোকাবেলা করেছেন ১১৫টি, চারের বাউন্ডারি ১১টি, ছয়-এর বাউন্ডারি নেই এবং গড়ে প্রতি ১০০ বলে ৭৩ দশমিক ৯১ রান করেছেন। 2. ভারত অতিরিক্ত রান পেয়েছে লেগ বাই ৮, ওয়াইড ৮ এবং নো বল ২, মোট ১৮ রান। 3. ভারত ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভার ২৩১ মিনিটে খেলে সর্বমোট ২৬০ রান করেছে। 4. ছয় নম্বর উইকেটে ধোনি আউট হয়েছেন, তখন ভারতের দলীয় রান ছিল ২০৫ এবং বলটি ছিল ৪১ ওভারের পর ৪র্থ বল। 5. বোলার ওমর গুল ৮ ওভার বল করেছেন, রান ছাড়া কোন ওভার নেই (Maidan 0), মোট রান দিয়েছেন ৬৯ , কোন উইকেট নিতে পারেননি এবং প্রতি ওভারে গড়ে রান দিয়েছেন ৮ দশমিক ৬২ ।
A-C Aggregate Refers to the total number of runs made, catches taken or dismissals completed by a player during a season or career. Agricultural Shot A batting stroke which is anything other than standard or copybook. All Rounder Refers to a player who is good at both batting and bowling. Appeal A plea made to the umpire by the fielding side when they believe a decision is needed to clarify whether a batsman has been dismissed. Arm Used to describe the accuracy and strength of a fielder who is very good at returning a ball from the outfield. IE: The player may be described as having a good “arm”. Arm Ball A ball delivered by a spin bowler which swings in the direction of the follow through delivery arm. Armguard Protective padding located on the batsmans front forearm. Artificial Pitch A pitch with a surface made from concrete, covered with matting or constructed from synthetic turf. Regulation pitches are produced from rolled turf. Ashes A small wooden urn containing the ashes of a burnt bail from the 1882 Australia v England test series. The urn is representative of the “death” of cricket, said to have occurred as a result of an Australian victory in the 1882 match. The Ashes, have since become a prized trophy contested every 2 years in the Ashes series played between Australia and England. Attack Refers to the variety of available bowlers at the disposal of the fielding captain. Average The total figure reached by computation of a batsmans run scoring performance measured against the number of deliveries faced or a bowlers performance measure against the number of runs conceded as compared to the number of wickets taken. Away Swinger Also known as the out swinger. A ball moving from the line of the stumps at the bowlers end, towards the slips area. Back Foot Refers to the movement of the batsman who has placed his cetre of gravity onto the back foot. Usually occurring as a result of a rising delivery. Generally a defensive batting technique, but occassionaly used to attack the ball. Back Up Refers to the batsman at the bowling end who leaves his crease after the bowler has released the ball in preparation for making a run. Baggy Green The name given to the Cap worn by the Australian players. It refers to the baggy, oversized appearance of the cap, the colour of which is dark green. Bails The two small pieces of moulded timber which sit atop the stumps. Ball Consisting of a leather case with a cork interior generally bound with fine cord. Bat The implement used by the batsman to strike the ball and defend his wicket. Generally manufactured from timber, with a preference given by bat makers to Willow. Bat-Pad Refers to a close in fieldsman who is waiting for a ball that after striking the bat, comes off the pad and rises into the air. Batsman A player who uses a bat to hit, edge, snick or guide the ball after it has been bowled, usually for the purpose of scoring runs during a match or game, but often also to practice the art and skills of batting. Batsman’s Paradise Refers to a pitch that will clearly favour the batting side. Batting The process of using the bat for the making of runs or defending the wicket. Batting Crease Also known as the Popping crease, this term refers to the line located 48 inches in front of the stumps and denotes the batsman’s safe ground. If a batsman is within his batting crease, he cannot be stumped or run out. Beamer A bowling delivery aimed at the head of the batsman. Beaten When a batsman attempts to strike the ball with the bat and fails to contact it. He is said to have been “beaten” by either the pace or skill of the delivery. Bite The amount of turn a spin bowler can obtain from the surface of the pitch. Block The position taken by the batsman when waiting for a ball to be bowled. Can also be used to describe a defensive batting stroke. Bouncer A bowling delivery of fast pace and pitched short with the purpose of rising to around chest height when arriving at the batsman. Boundary Denotes the outer limit of the playing area. Also used to describe a stroke by the batsman which immediately results in 4 runs. Bowl To deliver the ball in a manner determined to be legal by the umpire. Bowler Refers to a player who primarily excels at delivering a ball to a batsman or a player in the process of delivering the ball. Bowling Crease Refers to the line which runs directly through the area at the base of the stumps and for 48 inches either side and bounded by the return crease. Bowling Machine A mechanical device used to deliver the ball to a batsman. Can only be used during practice or training drills. Box The protective device worn by male players to protect the genitals. Break A delivery that spins to either side of the pitch after leaving the surface. Bump Ball A ball that canons into the ground immediately after leaving the bat and to the appearance of fieldsmen and spectators looks to have come directly off the bat. Bye A run generally scored through any means other than being struck by the bat. Call Either a confirmation or refusal that a run should be taken by a batsman in order to alert his partner. Usually shouted as a “Yes” “No” or “Wait” Cap The peaked head dress normally worn by a team member and showing the colours and or team logo. Caught Behind A ball caught by the wicketkeeper after being struck by the batsman. Cherry Refers to a new ball because of its bright red cherry coloured appearance. Chinaman A delivery by a left arm spinner which to a right hand batsman appears as if it will spin from off to leg, however, spins in the opposite direction. Devised by a West Indian player of Chinese descent. Chucker A bowler who the umpire has determined, not to have delivered the ball in a legal manner. Clean Bowled When a batsman is beaten by a ball and subsequently dismissed through the stumps being broken. Close Refers to a declaration by the batting team of a closure to an innings or the end of the days play. Cover Drive An attacking batting stroke directed towards the covers area or the protective covering placed over the pitch during adverse weather conditions. Crumble Refers to the state of the pitch, usually late in a game after experiencing considerable wear. A crumbling pitch is often favoured by a spin bowler, as it will allow the ball more bite and turn. Cut In batting, refers to a stroke played to the off side between the covers area and the wicketkeeper. In bowling, refers to the deviation of a delivery, caused by the bowler imparting varying types of spin on the ball. These type of deliveries are referred to as “cutters” either leg cutter or off cutter.
D-F
Deep Refers to the farthest outfield. A fieldsman in the deep, is either at or near the point boundary. Dig In The act of a batsman ensuring he remains at the crease for a long period, rather than attack and risk his wicket by attempting to score frequent runs. Drawing the Stumps The physical act by an umpire of withdrawing the stumps from the pitch at the close of the day’s play. Drinks A refreshment break during a session of play where fluids are brought onto the ground. Duck A score of zero believed to have got its name from the shape of the numeral for zero and the fact it resembles a duck’s egg. Edge The outermost perimeter of the bat. Also refers to a ball only just struck by the edge of the bat by a batsman. Sometimes called a “snick”. Feather A very faint edge of a ball by the batsman, aka a “snick”. Field The ground or oval on which a match is played. Also refers to the placement of fieldsmen within the playing area. Fieldsman A player strategically placed within the field of play, with the object of stopping the batting team from scoring runs. Fiery A hostile, generally fast pace bowler, who bowls a succession of usually short pitched deliveries. Finger Spin A method used by a bowler to deliver a ball which will spin off the surface of a pitch. The spin on the ball is imparted with the use of a finger or the fingers. Flannels The cream coloured clothing worn by a cricketer. Flat Generally refers to the condition of a pitch which has an even surface without much bounce. Flight The loop in the path of the ball after being bowled by the spin bowler into the breeze, which will cause it to drop sharply onto the pitch with the hope of deceiving the batsman. Flipper A delivery used by a leg spin bowler which presents to the batsman in a flatter and faster delivery to the normal leg spin delivery. This delivery is believed to have been devised by Australia’s Richie Benaud. But, some anecdotal evidence suggests it may have been first used by Clarrie Grimmet. Follow On The requirement by the fielding Captain for the batting team to immediately bat again after being dismissed during its first innings and not having met the total of the opposing side at the close of the first days play. Full Blooded A batting stroke played with the full physical power of the batsman. Full Toss A bowling delivery which reaches the batsman without first having struck the pitch.
G-J
Gardening The act of a batsman patting down with the tip of his bat, either loose areas of pitch or pieces of the playing surface that have come apart. Golden Duck When a batsman is dismissed by the very first ball he faces without scoring. Good Eye The ability of a batsman to assess and sight a delivery much quicker than would normally occur. Good Length A bowling delivery that pitches is such a position, it will confuse the batsman as to whether the ball should be played off the front or back foot. Googly This is a delivery by a right arm spin bowler which to a right hand batsman appears as if it will spin from leg to off, however, spins in the opposite direction. Groundsman The person who prepares and maintains the pitch and playing field. Grubber A bowling delivery that stays very low after leaving the surface of the pitch. Half Volley A bowling delivery which pitches in such a position that the batsman is able to strike the ball almost immediately it leaves the surface of the pitch. Hat-Trick When a bowler is able to manage 3 dismissals from 3 consecutive deliveries in the same match. Hit Wicket To strike and subsequently break the stumps with the bat resulting in the batsman’s dismissal. Hook (Shot) A batting stroke played to the on side as a result of a short pitched delivery from the bowler. Howzat Also stated as “Hows That?” when the fielding side is appealing fro a dismissal. First used by the Australians. Infield The grouping of fieldsman normally placed with 30-40 metres of the batsman. Innings The period of time spent batting by a team or individual. In Swinger A delivery from a bowler which deviates from the leg side to the off side. Jaffa A slang term used to describe a delivery bowled so well by the bowler it is unplayable. The term is thought to originate from the sweet (candy) of the same name, which is a small orange coloured chocolate filled ball. It may also come from the fruit of the same name, an orange known as the Jaffa, which is a very sweet seedless variety.
K-N
Knock A term used to describe the batting innings of an individual player. Leg (Leg Side) The part of the field which is behind the batsman when he faces the bowler when batting. Also known as the On side. LBW – Leg Before Wicket Better known as Leg Before Wicket. This is a method of dismissal where the ball when having been bowled would normally strike the stumps if not for the fact it strikes the batsman’s leg first. Leg Break A delivery from a spin bowler, which turns off the surface of the wicket from the leg side to the off side. Leg Cutter A delivery from a pace bowler which deviates from the leg side to the off side after leaving the surface of the pitch. Length Used to describe the part of the pitch where the ball either struck or would have struck prior to reaching the batsman. Lofted (Lofted Shot) A delivery struck in such a way it travels high in the air for some distance. Maiden When applied to a bowler, describes an over where no runs have been scored by the batsman from any delivery. For batsman, it refers to a maiden innings or maiden century, both being the very first occasion of each. Mental Disintegration A term believed to have been first used by Australian Captain Steve Waugh, to describe the art of sledging. Middle Order Refers to the batting positions or batsmen numbered between 5 and 7. Nets Generally applied to any area where cricket is practised. These areas are normally surrounded by netting, therefore leading to the term nets. New Ball Simply, a completely new ball yet to be used in play, or one which has not been used for many overs. Nightwatchman A player sent into bat who generally bats down the bottom of the order, but, is promoted up the order usually near the end of a days play when a wicket has fallen. Non Striker A term used to describe the batsman waiting at the bowlers end. Notch The original word used for a run. So called, because a notch was made in a piece of wood to record a run. Every tenth notch would be cut much deeper than the others to make final tallying of the score much easier.
O-R
Off (Side) The area immediately to the front of the batsman when waiting for the bowler to deliver a ball. Outfield The part of the playing surface of the arena closest to the boundary. Over The set number of balls bowled by a bowler. An over consists of 6 balls. The term “Over” is also called by the umpire when the bowler has completed his 6 balls. Over the Wicket Used to describe the bowling action of the bowler when the delivery arm follows through on the side closest to the stumps. The opposite term is Around the wicket, which describes the bowling action of a bowler when the delivery arm follows through on the side furthest from the stumps. Overthrow Describes the extra runs scored when a ball is missed by the fielder or wicketkeeper when returned to the stumps by a fielder. Pace (Bowling – Bowler) Describes all types of bowling other than spin bowling. Can vary from medium to fast pace. Pad A protective device used to protect the legs of both batsmen and wicketkeepers from being struck by the ball. Can also decsribe the manner in which a batsman may deflect the ball away from the stumps by thrusting the leg and striking the ball. Partnership Refers to the batting performance by two particular batsmen whilst batting together during any particular innings. Or to the cumulative score made by two partnering batsmen. Pick In batting, refers to the ability of the batsman to visually observe the type of delivery about to be bowled by a bowler. In bowling, refers to a method adopted by bowlers to lift the seam of a cricket ball to gain an unfair advantage (cheat). Pie Thrower A slang term used to describe a bowler of poor quality. Pitch A term also used to describe the wicket where the batting and bowling is performed. Wickets must be 22 yards in length to comply with the Laws of Cricket. Plumb When a batsman is standing directly in the line of the stumps. Quickie A term used to describe a bowler of fast pace. Return The throw by a fielder of the ball to either the wicketkeeper or the non strikers end. Run The method of scoring during a game of cricket. Also a single unit of score. Runner A player dressed in full batting equipment called to act as the runner for an injured batsman. A runner is only permitted to run for the injured batsman, who is still required to face the bowling. Run Out A method of dismissing the batsman by disturbing the stumps before the batsman has made his ground and is within the batting crease.
S-Z
Seam (Bowler – Bowling) Refers to a bowler who can cause a ball to strike the pitch on the seam of the ball, thereby causing it to deviate in its delivery path prior to reaching the batsman. Selectors A group of officials appointed for the purpose of picking the players to represent a cricket team. Session Refers to a period of play during a cricket match. Sightscreen A screen placed near the boundary behind the line of the bowlers arm in order to aid the batsman’s sighting of the ball when bowled. Silly Refers to any fielding position that is located very close to the batsman. Sitter Refers to a catch that would under normal circumstances be considered to be very easy.
Skipper The Captain of a cricket team. Sledge To use either abusive or offensive words against an opponent. The Aussies refer to this practice as “Mental Disintegration.” The term sledge, was a shortened term taken from the Australian saying “as subtle as a sledgehammer.” Slow Wicket Describes a pitch is in such a physical state, it offers no advantage to a pace bowler, however, a considerable advantage to a spin bowler. Sticks A slang term used for the stumps. Sticky Wicket Describes a pitch, which although dry on the surface, has underlying soft patches. This type of wicket is generally a difficult playing surface for batsman as it can cause a ball to behave unpredictably. Most pitch preparation practices have all but done away with these type of pitches, which were once very common in England and Australia. Streaker A slang term given to a person who runs across the cricket field naked. Strike (Striker) The name given to the batsman who is facing the bowler. The batsman is said to be “on strike”. Stumps The three upright timber sticks at each end of the pitch. Sitting atop each set of stumps are two bails. A term also used to describe the end of a days play.
Tail Generally refers to the last 4 batsman on the batting side. Test A cricket match of International standard lasting for 5 days. Toe Refers to the very bottom edge of the bat. Toss The toss of a coin is used to determine whether a particular team will initially bat or bowl to open a match. Twelfth Man An extra player chosen for a team to act as a substitute filedsman in the event one is called for. The twelfth man is generally not permitted to bat or bowl. Walk Generally used by a batsman to indicate his acceptance of a dismissal without waiting for the decision of an umpire. The physical act of walking away from the stumps. It was once the usual practice, but is now very uncommon. Wicket This term has many different uses. It can refer to the batting and bowling area, a dismissal by a bowler or the stumps. Wicket Maiden An over in which the bowler has taken a wicket without a batsman scoring runs. Yorker A bowling delivery that generally passes under the bat near to a batsman’s toes. Also known as a Sandshoe Crusher.
আইসিসি ক্রিকেট কমিটি গত মে মাসে এই পরিবর্তনসহ অন্য যে সুপারিশগুলো করেছিল সেগুলোর অনুমোদন দিয়েছে প্রধান নির্বাহীদের কমিটি।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা পদ্ধতিতে (ডিআরএস) ১ অক্টোবর থেকে আসছে পরিবর্তন। সেদিন থেকে আম্পায়ার্স কলে হারাবে না রিভিউ।
টেস্টে ৮০ ওভারের পর দলগুলো রিভিউ ফিরে পেত, সেটি আর হবে না। এখন থেকে টি-টোয়েন্টিতেও থাকবে রিভিউ।
কমিটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডিআরএস ব্যবহারের ন্যূনতম মানদণ্ড ঠিক করে দিয়েছে। এতে বল-ট্র্যাকিং ও এজ-ডিকটেশন প্রযুক্তি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ব্যাট-বলের মধ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে আইসিসি ব্যাটের আকৃতির ব্যাপারে সুপারিশের অনুমোদন দিয়েছে। এমসিসির ক্রিকেট কমিটি গত ডিসেম্বরে মুম্বাইয়ে এক সভায় ব্যাটের সর্বোচ্চ প্রস্থ ১০৮ মিলিমিটার সুপারিশ করে। আর ডেপথ ৬৭ মিলিমিটার ও এজ ৪০ মিলিমিটার করার কথা বলেছিল।
ম্যাচ চলাকালীন খেলোয়াড়দের শাস্তির বিষয়েও হয়েছে নতুন সিদ্ধান্ত। ফুটবল, হকিতে নিয়মিতই দেখা যায়। এখন থেকে দেখা যাবে ক্রিকেটেও। মাঠে গুরুতর অসদাচরণের জন্য খেলোয়াড়কে বাইরে পাঠানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আম্পায়ারদের। আইসিসি জানিয়েছে, সব সদস্য এটা পুরোপুরি প্রয়োগ করতে সম্মত হয়েছে।
এখন থেকে আর রান আউট থেকে বাঁচার সময়ে ডাইভ দিতে গিয়ে ব্যাটের বাউন্স করা নিয়ে ভাবতে হবে না ক্রিকেটারদের। ক্রিজের পেছনে মাটি স্পর্শ করার পর ব্যাট উঠে গেলেও আর রান আউট হতে হবে না।
sent me a pdf copy of this document in my mail address
very good post,
it’s help to them who wanted to learn more about cricket.
Very good post,
These posts will certainly come in handy, specially those who want to be cricketers. Thanks a lot.
Onek sundor lekha… But Bunch ball niye kono alochona thakle valo hoito….